Skip to main content

কুফর, শিরক ও গুনাহে কবীরা

 কুফর, শিরক ও গুনাহে কবীরা


শিরক ও বিদ‘আতের বর্ণনাঃ

ঈমান অপেক্ষা মূল্যবান রত্ন ও অতিপ্রয়োজনীয় সামগ্রী জগতে আর নেই। মনে-প্রাণে এ অমূল্য রত্নের হেফাযত করা আবশ্যক এবং এর প্রয়োজনীয় সামগ্রীকে প্রাণের চেয়েও অধিক মুহাব্বত করা উচিত।


প্রথম অধ্যায়ে বর্ণিত আক্বীদাগুলো হৃদয়ের মধ্যে গেঁথে রেখে দ্বিতীয় অধ্যায়ে বর্ণিত ঈমানের ৭৭ শাখা হাসিল করলে, ঈমান অত্যন্ত দৃঢ় হবে। আর কতগুলো জিনিস এমন আছে যে, তাতে ঈমান নষ্ট বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায়, তার কিছু বর্ণনা এখানে করা হচ্ছে। হাদীস শরীফের বর্ণনা মতে, আখিরী জামানায় ঈমান রক্ষা করা কঠিন হবে। তথাপি সাবধান! জীবন দিয়ে হলেও প্রত্যেক মু‘মিনকে তার ঈমানের হেফাযত করতেই হবে। ঈমান চিরস্থায়ী জাহান্নাম থেকে বাঁচার রক্ষাকবচ।


আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন- ‘যারা সরল পথ [ইসলামের শিক্ষা] প্রকাশ পাওয়ার পর রাসূলের সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিরুদ্ধাচরণ করবে এবং মুসলমানের তরিকা ছাড়া অন্য তরীকা অবলম্বন করবে, আমি তাদেরকে সেই পথগামীই করব এবং পরিণামে জাহান্নামে নিক্ষেপ করব। জাহান্নাম ভীষণ মন্দ জায়গা। আল্লাহর সঙ্গে শরিক করার পাপ কিছুতেই আল্লাহ তা‘আলা ক্ষমা করবেন না। এছাড়া অন্যান্য পাপ যার জন্যে যতটুকু ইচ্ছা করেন, ক্ষমা করবেন। যারা আল্লাহর সাথে শরীক করে, তারা মহাপাপী। তারা আল্লাহকে ছেড়ে স্ত্রী জাতির অর্থাৎ দেবীদের এবং খোদার অভিশপ্ত সেই পাপিষ্ঠ শয়তানেরই পূজা করছে, যে মানবজাতির সৃষ্টির লগ্নে বলেছিল- আমি মানবজাতির মধ্য হতে এক দলকে নিজের অনুসারী বানিয়ে তাদেরকে বিপথগামী করব, তাদেরকে নানা দুরাশায় আক্রান্ত করব, আর তাদেরকে গৃহপালিত পশুর কান কাটতে আদেশ করব। আর তা-ই করবে এবং আল্লাহর সৃষ্টিকে পরিবর্তন করতে [অর্থাৎ শ্মশ্রুমুগুণ বা দাড়িমুগুণ ইত্যাদি শরী‘আত বিরোধী কাজ করতে] আদেশ করব, তারা তাই করবে। বস্তুত যারা আল্লাহকে ছেড়ে শয়তানের আদেশ পালন করবে, তারা ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শয়তান তাদের নিকট ওয়াদা করে এবং আশ্বাস বাণী শোনায়, কিন্তু প্রকৃত প্রস্তাবে শয়তানের ওয়াদা ও আশ্বাস বাণী প্রবঞ্চনা ব্যতীত কিছুই নয়”।[সূত্র : সূরা নিসা, আয়াত ১৫-১৬।]


শিরক, বিদ‘আত, জাহিলিয়্যাতের রসম ও শয়তানের পায়রবি যে কত জঘন্য অন্যায়, নিন্দনীয় এবং ঈমানের জন্যে অনিষ্টকর, উপরোক্ত আয়াতগুলো দ্বারা তা স্পষ্টই বোঝা যায়। এসব কাজ করলে তাওহীদ ও রিসালাতের আক্বীদা নষ্ট হয় এবং ইমানের নূর ও রশ্মি চলে গিয়ে তথায় অন্ধকার বিস্তার লাভ করে। তাই ঈমানের বিষয়াবলী ও ইসলামী আক্বায়িদ বর্ণনা করার পর সাধারণের মাঝে প্রচলিত বিভিন্ন বদ রসম ও বড় বড় গুনাহ [গুনাহে কবীরা] বর্ণনা করে দেওয়া সমীচীন মনে করছি। ঈমানদারগণ উক্ত বিষয়গুলো সঠিকভাবে জেনে সেগুলো হতে বিরত থেকে নিজ নিজ ঈমানের হেফাযত করতে চেষ্টা করবেন বলে আশা করি।


প্রচলিত বদ রসমসমূহের মধ্যে কতগুলো কুফর ও শিরক পর্যায়ের, আর কতগুলো কুফর ও শিরক তো নয়, কিন্তু কুফর ও শিরকের কাছাকাছি, আর কতগুলো বিদ‘আত ও গোমরাহী এবং কতগুলো হারাম, মাকরূহ ও গুনাহে কবীরা। সবগুলো থেকেই বেঁচে থাকা আবশ্যক। তবেই ঈমান গ্রহণীয় ও সর্বাঙ্গীণ সুন্দর হবে।

Comments

Popular posts from this blog

বেলা ফুরাবার আগে by আরিফ আজাদ বই pdf

বেলা ফুরাবার আগে by আরিফ আজাদ বই pdf.  এই বইটি ডাউনলোড করতে নিচের লিংকে Click করেন। ডাউনলোড লিংক   

সূরা ফালাকের তাফসীর

 সূরা ফালাকের তাফসীরঃ নামকরণ: সূরা ফালাক ও সূরা নাস উভয় সূরার নামকরণ করা হয়েছে সূরার প্রথম আয়াতে উল্লিখিত শব্দ থেকে। ফালাক (الفلق) শব্দের অর্থ : প্রভাতকাল। আর নাস (النَّاس) অর্থ : মানুষ। এ দুই সূরাকে একত্রে معوذتان বা আশ্রয় প্রার্থনা করার দুই সূরা বলা হয়। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) জাদুগ্রস্থ হওয়ার পর এ সূরাদ্বয় দ্বারা ঝাড়ফুঁক করা হলে আল্লাহ তা‘আলার রহমতে তিনি সুস্থ হন, তাই এ নামেও এ সূরাদ্বয় পরিচিত। শানে নুযূল: মা আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, মদীনার ইয়াহূদী গোত্র বনু যুরাইকের মিত্র লাবীদ বিন আসাম নামক জনৈক মুনাফিক তার মেয়েকে দিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর মাথার ছিন্নচুল ও চিরুনীর ছিন্ন দাঁত চুরি করে এনে তাতে জাদু করে এবং মন্ত্র পাঠ করে চুলে ১১টি গিরা দেয়। এর প্রভাবে রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কোন কাজ করলে ভুলে যেতেন ও ভাবতেন যে করেননি। অন্য বর্ণনা মতে ৪০ দিন বা ৬ মাস এভাবে থাকেন। এক রাতে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) স্বপ্নে দেখেন যে, দু’জন লোক এসে একজন তাঁর মাথার কাছে অন্যজন পায়ের কাছে বসে। অতঃপর তারা বলে যে, বনু যুরাইকের খেজুর বাগানে যারওয়ান কূয়ার তলদেশে পাথরের নীচে চাপা দেয়া খেজুরের কাঁদির শুকনো খোস...

এহইয়াউস সিনান বই by ড. খোন্দকার আ.ন.ম. আব্দল্লাহ জাহাঙ্গীর

 এহইয়াউস সিনান বই by ড. খোন্দকার আ.ন.ম. আব্দল্লাহ জাহাঙ্গীর  এই বইটি  pdf ডাউনলোড লিংক