Skip to main content

কুরআনের আলোকে গণতন্ত্রের অসারতা

 কুরআনের আলোকে গণতন্ত্রের অসারতা


পবিত্র কুরআনের দৃষ্টিতে, প্রচলিত গণতন্ত্র অসার ও ভিত্তিহীন। দ্বীন ও রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রে বর্তমান গণতন্ত্রের বা নিছক সংখ্যাগরিষ্ঠতার বাতুলতা ও ভিত্তিহীনতা সম্পর্কে কুরআনে কারীমের বহু স্থানে স্পষ্ট ভাষায় উল্লেখ করা হয়েছেৎ


১. “আপনি যতই চান, অধিকাংশ লোক বিশ্বাসী নয়”। [সূত্র: সূরা ইউসুফ, আয়াত-১০৩]


২. “কিন্তু অধিকাংশ লোক বিশ্বাস স্থাপন করে না”। [সূত্র: সূরা মু‘মিন, আয়াত-৫৯] 


৩. “তাদের অধিকাংশেরই বিবেক-বুদ্ধি নেই”। [সূত্র: সূরা মায়িদা]


৪. “কিন্তু অধিকাংশ মানুষই জ্ঞান রাখে না”। [সূত্র: সূরা ইউসুফ, আয়াত-৫৮]


৫. “কিন্তু তাদের অধিকাংশই মূর্খ”। [সূত্র: সূরা আন‘আম, আয়াত-১১১]


৬. “কিন্তু তোমাদের অধিকাংশই সত্য দ্বীনে নিঃস্পৃহ”। [সূত্র: সূরা যুখরুফ, আয়াত-৭৮]


৭. “তোমাদের অধিকাংশই নাফরমান”।[সূত্র: সূরা মায়িদা, আয়াত-৫৯]


৮. “তাদের অধিকাংশই শুধু আন্দাজ ও অনুমানের উপর চলে। অথচ আন্দাজ-অনুমান সত্যের বেলায় কোন কাজেই আসে না”। [সূত্র: সূরা ইউনুস, আয়াত-৩৬]


৯. “নিশ্চয় বহুলোক আমার মহাশক্তির ব্যাপারে উদাসীন”। [সূত্র: সূরা ইউনুস আয়াত-৩৬]


১০. “তাদের অধিকাংশ লোককেই আমি প্রতিজ্ঞা বাস্তবায়নকারী পাইনি; বরং তাদের অধিকাংশকেই পেয়েছি হুকুম অমান্যকারী”। [সূত্র: সূরা আরাফ, আয়াত-১০]


১১. “তাদের পূর্বেও অধিকাংশ লোক বিপথগামী হয়েছিল”। [সূত্র: সূরা সাফফাত, আয়াত-৭১]


১২. “তাদের অধিকাংশের জন্য শাস্তি অবধারিত হয়েছে। সুতরাং, তারা বিশ্বাস করবে না”। [সূত্র: সূরা ইয়াসীন, আয়াত-৭]


১৩. “অনেকের উপর অবধারিত হয়েছে শাস্তি”। [সূত্র: সূরা হজ্জ, আয়াত-১৮]


১৪. “আল্লাহ তা‘আলার হুকুমে বহুবার সামান্য দল বিরাট দলের মুকাবিলায় জয়ী হয়েছে”। [সূত্র: সূরা বাকারাহ, আয়াত-২৪৯]


১৫. “হুনাইনের দিনে তিনি তোমাদের সাহায্য করেছেন-যখন তোমাদের আধিক্য তোমাদের প্রফুল্ল করেছিল, কিন্তু আল্লাহর ফায়সালার মুকাবিলায় তা কোন কাজে আসেনি এবং পৃথিবী প্রশস্ত হওয়া সত্ত্বেও তোমাদের জন্য তা সংকুচিত হয়েছিল। অতঃপর পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে তোমরা পলায়ন করেছিলে”।


১৬. “আপনি বলে দিন, অপবিত্র ও পবিত্র সমান নয়; যদিও অপবিত্রের প্রাচুর্য তোমাকে বিস্মিত করে”। [সূত্র: সূরা আল মায়িদা, আয়াত-১০০]


১৭.“যদি আপনি পৃথিবীর অধিকাংশের কথা মেনে নেন, তবে তারা আপনাকে আল্লাহর পথ হতে বিপথগামী করে দিবে। তারা শুধু অলীক কল্পনার অনুসরণ করে এবং সম্পূর্ণ অনুমানভিত্তিক কথা বলে থাকে। [সূত্র: সূরা আন‘আম, আয়াত-১১৬] 


উল্লেখিত আয়াতসমূহ দ্বারা স্পষ্টই প্রমাণিত হচ্ছে যে, অধিকাংশরই শিক্ষা নেই, জ্ঞান নেই, অধিকাংশ লোকই সত্য সন্ধানী নয়; সতর্কতা ও বিবেক বুদ্ধির অধিকারী নয়; প্রতিজ্ঞা বাস্তবায়নকারী নয়; তারা জান্নাতী হওয়া এবং আখিরাতের শান্তি বা আজাবের তোয়াক্কা করে না। পবিত্র কুরআন আরো ঘোষণা করছে যে, সংখ্যাধিক্য তথা গণতন্ত্র সত্যের মাপকাঠি হওয়া তো দূরে কথা, এর মূল ও কেন্দ্র বিন্দুতেই রয়েছে গলদ ও ভ্রান্তি। কেননা, দুনিয়ার অধিকাংশ লোকই জাহান্নামের পথে গমনকারী, গুমরাহ, প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকারী, উদাসীন, আন্দাজপূজারী, সত্যনিস্পৃহ, নির্বুদ্ধিতা সম্পন্ন, অজ্ঞতা ও মূর্খতার শিকার। সুতরাং, এ জন্য তাদের রায়ের দ্বারা কোন সঠিক বা সত্য প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। কেবল সংখ্যাধিক্য ইসলামী মুলনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে না। তাই একে কোন সমস্যার সমাধান প্রদানের মাপকাঠি মানা যায় না। 


অবশ্য হক্বানী উলামা ও দ্বীনদার বুদ্ধিজীবীগণের অধিকাংশের রায়কে ইসলাম স্বীকৃতি দিয়েছে এবং তার ভিত্তিতে ফায়সালা প্রদানের অনুমতি দিয়েছে। ইসলামের সোনালী যুগে সকল গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত এর ভিত্তিতেই নেয়া হতো।


Comments

Post a Comment

Popular posts from this blog

বেলা ফুরাবার আগে by আরিফ আজাদ বই pdf

বেলা ফুরাবার আগে by আরিফ আজাদ বই pdf.  এই বইটি ডাউনলোড করতে নিচের লিংকে Click করেন। ডাউনলোড লিংক   

সূরা ফালাকের তাফসীর

 সূরা ফালাকের তাফসীরঃ নামকরণ: সূরা ফালাক ও সূরা নাস উভয় সূরার নামকরণ করা হয়েছে সূরার প্রথম আয়াতে উল্লিখিত শব্দ থেকে। ফালাক (الفلق) শব্দের অর্থ : প্রভাতকাল। আর নাস (النَّاس) অর্থ : মানুষ। এ দুই সূরাকে একত্রে معوذتان বা আশ্রয় প্রার্থনা করার দুই সূরা বলা হয়। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) জাদুগ্রস্থ হওয়ার পর এ সূরাদ্বয় দ্বারা ঝাড়ফুঁক করা হলে আল্লাহ তা‘আলার রহমতে তিনি সুস্থ হন, তাই এ নামেও এ সূরাদ্বয় পরিচিত। শানে নুযূল: মা আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, মদীনার ইয়াহূদী গোত্র বনু যুরাইকের মিত্র লাবীদ বিন আসাম নামক জনৈক মুনাফিক তার মেয়েকে দিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর মাথার ছিন্নচুল ও চিরুনীর ছিন্ন দাঁত চুরি করে এনে তাতে জাদু করে এবং মন্ত্র পাঠ করে চুলে ১১টি গিরা দেয়। এর প্রভাবে রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কোন কাজ করলে ভুলে যেতেন ও ভাবতেন যে করেননি। অন্য বর্ণনা মতে ৪০ দিন বা ৬ মাস এভাবে থাকেন। এক রাতে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) স্বপ্নে দেখেন যে, দু’জন লোক এসে একজন তাঁর মাথার কাছে অন্যজন পায়ের কাছে বসে। অতঃপর তারা বলে যে, বনু যুরাইকের খেজুর বাগানে যারওয়ান কূয়ার তলদেশে পাথরের নীচে চাপা দেয়া খেজুরের কাঁদির শুকনো খোস...

এহইয়াউস সিনান বই by ড. খোন্দকার আ.ন.ম. আব্দল্লাহ জাহাঙ্গীর

 এহইয়াউস সিনান বই by ড. খোন্দকার আ.ন.ম. আব্দল্লাহ জাহাঙ্গীর  এই বইটি  pdf ডাউনলোড লিংক